আগের সময়গুলোতে মানুষ পত্র লিখে একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করতো, অনেক সময় পাখির মাধ্যমে চিঠির আদান-প্রদান হতো। তারপর আসলো ডাক বিভাগ, যা চিঠি আদান-প্রদানের এক নতুন মাধ্যম তৈরি করেছিল। তবে আজকের পৃথিবীতে আমরা ইন্টারনেটের স্বর্ণযুগে বাস করছি, যেখানে চিঠি বা পত্রের স্থান দখল করেছে ইমেইল। আজকাল ইমেইল ছাড়া অফিসিয়াল বা ব্যক্তিগত যোগাযোগ কল্পনাও করা যায় না। আজকের কর্পোরেট দুনিয়ায় প্রফেশনাল ইমেইল লেখা একটি অপরিহার্য দক্ষতা। আপনি যদি একজন চাকরিজীবী, কোম্পানির দায়িত্বশীল কেউ অথবা ম্যানেজমেন্ট লেভেলের পেশাজীবী হন, তবে আপনার প্রতিদিনই কমবেশি ইমেইল আদান-প্রদান করতে হয়। অনেক সময় সামান্য একটি ভুল ইমেইলই আপনার ভাবমূর্তি নষ্ট করে দিতে পারে। তাই প্রফেশনাল ইমেইল লেখার কিছু নিয়ম জানা থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
এই ব্লগে আমরা আলোচনা করবো কীভাবে একটি সুন্দর, মার্জিত ও প্রফেশনাল ইমেইল লিখবেন।
বিশেষভাবে থাকছে ৬টি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ নিয়ে আলোচনা করবো যেগুলো একটা ইমেইল কে আরো আকর্ষণীয় করে তুলবে।
১. Subject:
ইমেইলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলোর একটি হলো Subject Line। আপনার ইমেইলে subject টি এমনভাবে লিখতে হবে যেন এটি পড়ে আপনি যাকে মেইল লিখছেন সে সহজে বুঝতে পারে ইমেইলটি কী বিষয়ে। Subject যদি অস্পষ্ট বা অপ্রাসঙ্গিক হয়, তাহলে ইমেইলটি হয়তো না ও দেখা হতে পারে। তাই এমন একটি Subject লিখুন যা সংক্ষিপ্ত, নির্ভুল এবং ইমেইলের মূল উদ্দেশ্যটি স্পষ্টভাবে তুলে ধরে।
উদাহরণ : Request for Collaboration Opportunity
মনে রাখবেন, Subject এ কখনোই শুধু Hi/Hello এগুলো ব্যবহার করবেন না।
২. Greetings:
ইমেইলের শুরুতেই যেটা গুরুত্বপূর্ণ, সেটি হচ্ছে উপযুক্ত সালাম বা অভিবাদন দেওয়া। আপনি যাকে ইমেইল করছেন, তার সঙ্গে আপনার সম্পর্ক অনুযায়ী Greetings ব্যবহার করবেন।
উদাহরণ:
Dear Sir/Madam,
Respected Mr. Rahman,
Hello Mr. Karim, (কমফোর্ট লেভেল থাকলে)
অচেনা বা আনুষ্ঠানিক কাউকে ইমেইল করলে “Dear” সবচেয়ে নিরাপদ অপশন। একইসাথে “Hi” বা “Hello” একটু ইনফর্মাল, তবে পরিচিতদের ক্ষেত্রে চলে।
৩. Opening Sentence:
Greetings এর পরেই আসে “Opening Sentence” যেটা দিয়ে আপনি জানান দেবেন কেন এই ইমেইলটি করছেন।
এটা যেন সংক্ষিপ্ত হয় এবং একেবারে মূল উদ্দেশ্য স্পষ্ট করে।
উদাহরণঃ
I hope this email finds you well. I am writing to inform you about…
I am reaching out regarding the meeting scheduled for next Monday.
This is to formally request approval for…
এই অংশে যতটা সম্ভব প্রাসঙ্গিক ও স্পষ্ট থাকুন। যেনো আপনার কথা তার কাছে স্পষ্ট থাকে।
৪. Body of the Email:
এখানে আপনি বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরবেন। কিন্তু মনে রাখবেন, প্রফেশনাল ইমেইলে বড় না, বরং পরিষ্কার লেখা বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
এক্ষেত্রে ভালো কিছু চর্চা করা যেতে পারেঃ
আপনার বক্তব্য স্পষ্ট ও প্রফেশনাল টোনে লিখুন। যাতে আপনার ব্যাপারে তাঁদের ইম্প্রেশন স্পষ্ট থাকে।
৫. Closing Sentence:
আপনার ইমেইলের শেষটা যেন সবসময় ধন্যবাদ ও বিনয়ের সাথে শেষ হয়। যাতে, আপনার ইমেইল পড়ে পাঠকের আপনার প্রতি ভালো ও পজিটিভ অনুভূতি তৈরি হয়।
উদাহরণ:
এই অংশে আপনি তাঁর কাছ থেকে ভবিষ্যতে কী ধরনের ফীডব্যাক বা উত্তর আশা করছেন, সেটাও পরিষ্কার করুন।
৬. Signature:
ইমেইলের শেষে নিজের নাম ও পরিচয় অবশ্যই লিখুন। প্রয়োজনে মোবাইল নম্বর বা designation দিতে পারেন।
উদাহরণ:
Md. Arif Hossain
আপনার Signature যেন সবসময় একই থাকে। এতে প্রফেশনালিজম প্রকাশ পায়।
আপনি চাইলে আপনার প্রতিষ্ঠানের signature টি আগে থেকেই সেট করে রাখতে পারেন, এতে করে বার বার নতুন করে Signature করার ঝামেলার মুখোমুখি হতে হবে না।
একটি ভালো প্রফেশনাল ইমেইল লেখা মানে শুধু বানান ঠিক রাখা নয়। বরং, এটি আপনার ভাবমূর্তি, কমিউনিকেশন স্কিল এবং সময়জ্ঞানকে উপস্থাপন করে। একজন প্রফেশনাল হিসেবে, আপনি যতো সংক্ষিপ্ত এবং তথ্যবহুল ইমেইল লিখবেন, ততোই আপনার প্রতি শ্রদ্ধা ও আস্থা বাড়বে।
তাই, আজ থেকেই অভ্যাস করুন। প্রতিটি ইমেইল যেন হয় সংক্ষিপ্ত, প্রাসঙ্গিক এবং গ্রহনযোগ্য। কারণ, প্রফেশনাল ইমেইল হচ্ছে আপনার ডিজিটাল পরিচয়।
SHARE